ধর্ম

মদীনা নিয়ে বিভ্রাট

কোরআনের সূরার নামকরণগুলো আল্লাহর দেয়া নয়। কোরআনের আয়াতগুলো কে বা কারা বিভিন্ন সূরায় বা অধ্যায়ে বিভক্ত করেছে আগের আয়াত পরে ও পরের আয়াত আগে করে তা কেউ জানে না। আয়াতগুলো খিচুড়ি হয়ে গেছে। এখানেও বিরাট রহস্য। কোরআনে তাই কোন একটি সূরা পড়ে কোন ঘটনার পূর্ণ বর্ণনা পাবেন না। একই ঘটনার বিভিন্ন অংশ পুরো কোরআনে বিভিন্ন আয়াতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কোন আয়াত কোন নবী সম্পর্কে বলা হচ্ছে তাও স্পষ্ট করে বলা সম্ভব হয় না অনেক

সময়ে। যেমন মুসলিম আলেমরা বলেন ১৭ নাম্বার সূরার ১ নম্বর আয়াতটি মুহাম্মাদকে বোঝানো হয়েছে (যদিও মুহাম্মাদের নাম উল্ল্যেখ নেই) কিন্তু দ্বিতীয় আয়াটিতে আবার সরাসরি “মুসা” নবীর নাম উল্ল্যেখ আছে। তাহলে ১ নম্বর আয়াতটি যে “মুহাম্মদ” কে বোঝানো হয়েছে তার ভিত্তি কি ? এটা বোঝাতে আবার সেই তিন শট বছর পরের হাদিস ব্যাখ্যা করা হবে। তাতেও পুরোপুরি

স্পষ্টতা আসবে না। মক্কী সূরা মানেই যে সব আয়াত মক্কায় নাজেল হয়েছিল তা নয় আবার মাদানী সূরা মানেই সব আয়াত মদিনায় নাজেল হয়েছিল তাও না। মক্কী সূরা মানেই সেই সূরার সকল আয়াত মাদানী সূরাগুলোর আগে তাও না। অনেক মক্কী সূরার আয়াত মাদানী সূরাগুলোর পরে নাজেল হয়েছিল। যেমন সূরা ১৭ কে ধরা হয় মূলত একটি মক্কী সূরা কিন্তু এই সূরার ৮১

নম্বর আয়াতটি অধিকাংশ মুসলিম আলেম মনে করেন মুহাম্মদ মক্কা থেকে মদিনা গিয়ে আবার মক্কা এসে ক্বাবা এলাকার মূর্তিগুলো ভাঙার সময় উচ্চারণ করেছিলেন (আব্দুর রাজ্জাকের ওয়াজে শুনুন: https://youtu.be/VWlE8cfIimM) কিন্তু এর পর তিনি আবার মদিনা চলে যান। কারণ ইসলামের ইতিহাস দাবি করে হজরত মুহাম্মদ মক্কা থেকে মদিনা গিয়ে আবার মক্কা

জয়ের সময় মক্কা আসেন এবং পরে আবার মদিনা যান। মক্কার মতন বড় শহর ও জন্মভূমি ছেড়ে তিনি কেনই বা মদিনা ফিরে গিয়েছিলেন তার কোন স্পষ্ট কারণ নেই। “মদিনা” যে ঠিক কোন শহর তাও পরিষ্কার নয়। সেই সময়ের ঐতিহাসিক কোন ম্যাপে”মদিনা” নামের কোন শহরের নাম নেই। “ইয়াথরিব” কবে মদিনা হলো তাও কেউ জানে না। কোরআনে “ইয়াথরিব” নামটি

এসেছে সূরা ৩৩ আয়াত ১৩ তে। হাদিস বলে “মদিনা” নামটি অভিশপ্ত তাই মুহাম্মদ সেই নামটি পরিবর্তন করে “তাইবা” (অর্থাৎ ‘ভালো’) রাখেন (https://fb.watch/cSHvvkzu-t/) কিন্তু কোরআনে তাহলে কেন ইয়াথরিব নামটি ব্যবহৃত হয়েছিল ? কেন হুকুম দেয়া হলো না এই নাম আর ব্যবহার না করার জন্য ? মদিনা শব্দের অর্থ হচ্ছে “শহর” ! এই মদিনা শব্দটি কোরআনে বিভিন্ন

সময়ে বিভিন্ন নবীদের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বিভিন্ন শহরকে বোঝানো হয়েছে। “মদিনা” শব্দটি একবচন হিসেবে কোরআনে এসেছে ১৪ বার আর বহুবচন “মদিনাইন” হিসেবে এসেছে ৩ বার। মুসলিম আলেমগণ বলে থাকেন সূরা ৯: আয়াত ১০১, ১২০; সূরা ৩৩; আয়াত ৬০; সূরা ৬৩: আয়াত ৮ এ “ইয়াথরিবের” নাম পরিবর্তিত হয়ে “মদিনা” হয়েছে। অথচ,”মদিনা” শব্দটি স্রেফ

“শহর” অর্থে বোঝানো হয়েছে সূরা ৭: আয়াত ১১১,১২৩ এ ফেরাউনের ঘটনা বর্ণনা করার সময়, যেই শহর ছিল বর্তমান মিশরে। আবার সূরা ১২: আয়াত ৩০ এ সূরা ইউসুফে এই “মদিনা” শব্দ একটি “শহর” অর্থে বোঝানো হয়েছে ইউসুফের ঘটনা বর্ণনার সময়। আমরা লুত সম্প্রদায়ের ঘটনা বর্ণনায় সূরা ১৫: আয়াত ৬৭ তে আবার “মদিনা” শব্দের ব্যবহার দেখতে পাই। কিন্তু কোন

ভাবেই বর্তমান দিনের মদিনা কিভাবে “ইয়াথরিব” থেকে “তাইবা” হয়েও আবার কেনই বা “তাইবা” থেকে আবার “মদিনা” হয়ে গেলো তার কোন স্পষ্ট প্রমান বা যুক্তি নেই। এখন ভেবে দেখুন একটি শহরের নাম যদি “শহর” হয় তাহলে তা কি যুক্তি সংগত হয়? পাগল হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। গোজামিল আর গোজামিল। আসলে মিথ্যা চিরকাল ঢেকে রাখা সম্ভব নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button